যে কোটায় পতন আওয়ামীলীগের
আওয়ামী লীগও এখন কোটাবিরোধী!

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সূত্র ধরে পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের। সেই আওয়ামী লীগও এখন কোটার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, সমালোচনা করছে কোটার।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় কোটায় চান্স পাওয়া নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
পোস্টে আওয়ামী লীগ লিখেছে, ‘ঢাকা মেডিকেল কলেজে ৭০ নম্বর পেয়েও চান্স মেলেনি, কোটায় ৪০/৪১ পেয়ে ভর্তির সুযোগ।’ পোস্টের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ অন্যান্য কয়েকজন উপদেষ্টা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের কয়েকজন নেতা এবং ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীকে যুক্ত করে একটি ফটোপোস্ট দিয়েছে। এতে আরও লিখেছে, ‘অবৈধ সরকার দেশটাকে করেছে ছারখার’।
রোববার (১৯ জানুয়ারি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর। এতেই সামনে আসে কোটা নিয়ে প্রশ্ন। মেধা থেকে ৭৩ নম্বর পেয়েও ভর্তির জন্য প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হতে পারেননি, কিন্তু কোটায় ৪১ নম্বর পেয়েও নির্বাচিত হতে পেরেছেন।
এদিকে কোটা নিয়ে আওয়ামী লীগের এই পোস্টের পক্ষে-বিপক্ষে মন্তব্য করেছেন অনেকে। কেউ কেউ এই পোস্টের সমর্থন করলেও বেশিরভাগ মন্তব্যকারী সমালোচনা করেছেন।
তোফাজ্জল নামে একজন লিখেছেন, ‘যারা কোটা ইস্যুতে ক্ষমতা ছাড়া হয়েছে তারাই কোটা নিয়ে কথা বলে, কি নির্লজ্জ!’
ইরফান নামে একজন লিখেছেন, ‘এই ধরনের কথা ৬ মাস আগে বললে এখনো ক্ষমতায় থাকতো।’
আওয়ামী লীগের এই পোস্ট সমর্থন করে তাপসী তাবাস্সুম উর্মি নামে একজন লিখেছেন, ‘দেশে যা শুরু হইছে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ আবারও বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে ইনশাআল্লাহ।’ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে ভারতে যান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। মূলত ২০১৮ সালে শুরু হওয়া কোটা আন্দোলনই নতুন করে মাত্রা নেয় ২০২৪ সালে। ২০১৮ সালে বিষয়টি আদালতে গেলে তা প্রায় থেমে যায়। তবে আদালতের এক রায়ের পরে দ্বিতীয় দফা আন্দোলন শুরু হয় গত জুন থেকে।
এরপর থেকেই আন্দোলন তীব্র হতে থাকে। জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে অনেক প্রাণহানি ঘটে, আহত হন অনেকে। আন্দোলনকারীদের ওপর সরকারের দমনীতিই কাল হয়ে দাঁড়ায়। যার শেষ পরিণতি ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের মধ্যদিয়ে। এরপর দায়িত্ব গ্রহণ করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার।