ময়মনসিংহে বৈষম্যবিরোধী নেতাকে মারধর ও ছুরিকাঘাত

ময়মনসিংহের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ময়মনসিংহ মহানগর শাখার সদস্যসচিব আল নূর মো. আয়াসকে (২৫) মারধর ও ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগরের পাটগুদাম ব্রিজ মোড় এলাকায় দুর্বৃত্তরা তাঁর ওপর হামলা চালায়। পরে তাঁকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, আয়াসের অবস্থা শঙ্কামুক্ত।
আল নূর মো. আয়াস বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শুরু থেকেই সক্রিয় ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ময়মনসিংহ মহানগর কমিটির সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তাঁর বাড়ি জেলার তারাকান্দা উপজেলার গোবিন্দখিলা গ্রামে। ওই গ্রামের মোস্তফা কামালের ছেলে তিনি।
তবে ময়মনসিংহ নগরের বাঘমারা এলাকায় থাকেন আল নূর। আজ সকালে নেত্রকোনার শ্যামগঞ্জ থেকে এক স্বজনকে দেখে ময়মনসিংহ নগরে ফিরছিলেন তিনি। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগরের পাটগুদাম ব্রিজ এলাকায় যানজটের কারণে বাস থেকে ব্রিজ মোড়ে নেমে পড়েন। এ সময় মুঠোফোনে কল আসায় দাঁড়িয়ে কথা বলার সময় একদল দুর্বৃত্ত তাঁর ওপর হামলা চালায়।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আল নূর বলেন, ‘বাস থেকে নামার পর মুঠোফোনে কল আসায় ব্রিজ মোড়ে দাঁড়িয়ে কথা বলতে থাকি। ওই অবস্থায় পাঁচ থেকে ছয়জন যুবক আসেন, তাঁদের কাউকে আমি চিনি না। আমাকে ছুরি ঠেকিয়ে নিচের দিকে যেতে বলে। সে এলাকাটিতে জয়বাংলা চত্বর ছিল। তাঁদের হাতে ছুরি আর আমার সঙ্গে কেউ ছিল না। নিচে নিয়ে যাওয়ার পর তাঁরা বলতে থাকে, “তুই বেশি বারাবারি করতাছস। তোদের একেকটাকে ধইরা পিটাইয়া শেষ করে দিব। ব্রিজ মোড়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুারাল তুই ভেঙেছিস। তোকে আজকে মেরেই ফেলব, একটাকেও রাখব না। তুই অনেক কিছু করেছিস, অনেক ক্ষতি করেছিস আমাদের।” এ ছাড়া বিভিন্ন রকম কথা বলতে থাকে।’
এরপর আল নূরকে লাঠি দিয়ে পেটানো হয়। তিনি দুজনকে ধাক্কা দিয়ে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে তাঁর হাতে ও পায়ে ছুরিকাঘাত করা হয়।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শহীদুর রহমান জানান, আয়াসের পায়ে ছুরিকাঘাত আছে। দেহের অন্যান্য স্থানে আঘাতের চিহ্ন আছে। তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়েছে, বিভিন্ন পরীক্ষা–নিরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ময়মনসিংহ জেলা শাখার সদস্যসচিব মো. আলী হোসেন বলেন, আহত ছাত্রনেতার বর্ণনা অনুযায়ী ধারণা করছি ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের লোকজন এটি করে থাকতে পারে। তবে তদন্তে প্রকৃত বিষয়টি জানা যাবে। জুলাই অভ্যুত্থানের যোদ্ধাকে আজকে যদি এভাবে আক্রমণ করা হয়, তাহলে সামনের দিনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি মানুষ আস্থা হারাবে। তিনি অপরাধীদের দ্রুত চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, কারা কী কারণে হামলা করেছে, তা বলা যাচ্ছে না। আহত ছাত্রনেতাও হামলার কারণ সম্পর্কে বলতে পারছে না। এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।