হামলা ভাংচুর লুটপাটের ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী মিলন গনমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেয়ায় তার উপরেও বর্বর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে মিলনের ডান হাত হাড় ভাঙ্গা জখম হয়েছে।
বুধবার(১৪ মে) বিকালে ময়মনসিংহ সদর উপজেলা ৭নং চর নীলক্ষীয়া ইউনিয়নে রাজগঞ্জ (সাহেব কাছারি) বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
এমন অভিযোগ উঠেছে গৌরীপুর উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের চর ঘোড়ামারা গ্রামের সাইকেল মিস্ত্রী মৃত কাদির ফকিরের ছেলে বিএনপি নেতা মো: সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হলে অভিযুক্ত সিরাজ জনতার রোষানল থেকে নিজেকে বাঁচাতে দৌঁড়ে বাজারের নিকটবর্তী একটি বাড়িতে আত্মগোপন করে। স্থানীয় শত শত জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে বাড়ির চারপাশে প্রায় দুই ঘণ্টা ঘেরাও করে রাখে। পরে খবর পেয়ে কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।
অভিযুক্ত সিরাজুল ইসলামকে বিএনপি নেতা আব্দুল হান্নানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সহায়তায় বিষয়টি মীমাংসার প্রস্তাব করে সময় নেন।
তবে অদ্যবদি পর্যন্ত বিষয়টি কোনো প্রকার সুরাহা না হওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভের বহিঃ প্রকাশ ঘটেছে। যেকোনো সময় আবারও ঘটতে পারে অপ্রীতিকর ঘটনা।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মো: সিরাজুল ইসলাম এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি হামলা ভাংচুরের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি গৌরীপুর উপজেলা বিএনপির নেতা। আমার ছেলে রিয়াদুল ইসলাম মহানগর ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাকালীন কমিটির সদস্য ছিলো। আমার দ্বারা এমন কাজ কি সম্ভব?

তবে তার ছেলে রিয়াদুল ইসলাম রিয়াদ পলাতক ফ্যাসিষ্ট আওয়ামীলীগের দোষর সোমনাথ সাহার মিছিল মিটিংয়ের ছবি ও ভিডিও ফুটেজ দেখে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতা বা সমর্থক ছিলেন বলে প্রতীয়মান হয়। স্থানীয়ভাবে ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী হিসেবে তার ব্যাপক পরিচিতি ছিলো বলে জানা যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গৌরীপুরের বিএনপির কয়েকজন নেতা আক্ষেপ করে বলেন, রাজনীতি করাটাও কঠিন হয়ে গেছে। উপজেলার নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটিতে সিরাজুল ইসলাম যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে স্থান পাওয়া এটা রাজনীতিতে ভালো বার্তা নয়, ৫ আগস্টের পর রাজনীতির মাঠে সরব হয়ে উঠা নেতাদের কমিটিতে স্থান মানেই ত্যাগীদের অবমূল্যায়ন। সিরাজ আগস্ট পূর্বে রাজনীতির মাঠে কখনোই সক্রিয় ছিল না।
এ বিষয়ে গৌরীপুর উপজেলা বিএনপি নেতা হান্নান এর মুঠো ফোনে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে ফোন রিসিভ না করায় তার কোনো বক্তব্য জানা যায়নি। এমনকি তার মোবাইলে ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও তিনি কোনো সাড়া দেননি।
এর আগে সাহেব কাছারি বাজারে সোহাগের কাঁচা মালের আড়তে হামলা ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনায় ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
এ বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানিয়েছেন, অভিযোগের তদন্ত চলমান রয়েছে, তদন্ত শেষে দোষী সাব্যস্ত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, কাঁচামালের আড়তে হামলা ভাংচুরের ঘটনায় মামলা বা মীমাংসা কোনটাই না হওয়ায় পরবর্তীতে নেক্কার জনক ঘটনাটি ঘটেছে। সচেতন মহল জানান, যে সকল দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ মীমাংসার দায়িত্ব নিয়েছিলেন তাদের ব্যর্থতাই পরবর্তী ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে বর্তমানে যে প্রেক্ষাপটের সৃষ্টি হয়েছে তাতে আরও মারামারি কাটাকাটির সম্ভাবনা রয়েছে। তাই দায়িত্বশীলদের জোড়ালো ভূমিকা রাখা উচিৎ।