সৌদিতে ভালো বেতনে কাজের লোভ দেখিয়ে হাতিয়ে নিছে ১৭ লাখ টাকা : সর্বস্ব হারিয়েছে সিদ্দিক

ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চরঈশ্বরদিয়া গ্রামের মো. আবু বক্কর সিদ্দিককে বিদেশে ভালো কাজে আশ্বাস দিয়ে সৌদি আরবে নিয়ে আটক রেখে এক প্রতারক চক্র ১৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অপরাধে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগী পরিবার।
অভিযোগে জানা যায়, ভুক্তভোগী মো: আবু বক্কর সিদ্দিক ও প্রতারক চক্রের সদস্য মোঃ মফিজুল ইসলাম (৫৫), মফিজুলের বোন মোছাঃ শিল্পী আক্তার, উভয় পিতা।- মোঃ আব্দুল কাদের বেপারী, গ্রাম- চর ঈশ্বরদিয়া(মসিক এর ৩১নং ওয়ার্ড) থানা:- কোতোয়ালী, জেলা- ময়মনসিংহ একই গ্রামের বাসিন্দা। প্রতারণার শিকার মো: আবু বক্কর সিদ্দিক কোতোয়ালী থানাধীন চর ঈশ্বরদিয়া বাজার এলাকায় একটি মুদি দোকানের ব্যবসা করতেন। সিদ্দিকের মুদির দোকান থাকার সুবাদে প্রতারক চক্রের সদস্য মোঃ মফিজুল ইসলাম (৫৫) ও মফিজুলের বোন মোছাঃ শিল্পী আক্তার প্রায় সময় দোকানে আসা যাওয়া করে এবং দোকান থেকে মালামাল ক্রয় করার সুবাদে সিদ্দিকের সাথে সুম্পর্কের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে মফিজুল বলে যে, তার দুই ছেলে নাজমুল হাসান(৩০) ও মিরাজ হাসান(২৫) সৌদি প্রবাসী। দেশের বাহিরে কেউ গেলে মফিজুল ইসলাম ও তার বোন শিল্পী আক্তারকে জানাবেন বলে প্রস্তাব দেন। একপর্যায়ে মফিজুল ইসলাম, মফিজুলের বোন শিল্পী আক্তার এবং মফিজুলের সৌদি প্রবাসী দুই ছেলে নাজমুল হাসান ও মিরাজ হাসান প্রস্তাব করেন আবু বক্কর সিদ্দিককে বিদেশ নিয়া যাওয়ার জন্য। আবু বক্কর সিদ্দিক প্রস্তাবে রাজি হওয়ার পর মফিজুল ইসলাম ও শিল্পী আক্তার বিদেশে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ নগদ ৭,০০,০০০/- (সাত লক্ষ) টাকা আবু বক্কর সিদ্দিক এর কাছ থেকে বুঝে নেন। পরবর্তীতে আবু বক্কর সিদ্দিককে চাকুরী দিবে মর্মে ভূয়া, বানোয়াট কাগজপত্রের মাধ্যমে সৌদি আরব পাঠায়। আবু বক্কর সিদ্দিক গত ০৫/১০/২০২৩ ইং তারিখে সৌদি আরব পৌঁছাইলে প্রতারক মফিজুল ইসলাম এর দুই ছেলে নাজমুল হাসান ও মিরাজ হাসান আমাকে এয়ারপোর্ট হইতে রিসিভ করে অজ্ঞাতস্থানে নিয়া যায়। পরবর্তীতে আমি ১ বছর চলে গেলেও আবু বক্কর সিদ্দিককে কোন প্রকার চাকুরী ব্যবস্থা করে দেয়নি।
চাকুরীর কথা বললে বিভিন্ন সমস্যার কথা বলিয়া তালবাহানা করিয়া ঘুরাইতে থাকে আবুবকর সিদ্দিককে। একপর্যায়ে মফিজুল ইসলাম ও শিল্পী আক্তারের হুকুমে মফিজুলের দুই ছেলে নাজমুল হাসান ও মিরাজ হাসান জিম্মি করিয়া আবু বক্কর সিদ্দিকের পরিবারের লোকজনদের নিকট থেকে ১০,০০,০০০/- (দশ লক্ষ) টাকা আদায় করিয়া নেয় এবং জিম্মিদশা থেকে বিগত ২৯/১২/২০২৪ইং তারিখে আবু বক্কর সিদ্দিক কৌশলে নাজমুল হাসান ও মিরাজ হাসানের নিকট থেকে পালিয়ে দেশে চলে আসেন। দেশে এসে আবু বক্কর সিদ্দিক দেখেন প্রতারক চক্রের মুলহোতা মফিজুল ইসলাম ও তার বোন শিল্পী আক্তার বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছে। আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, আমার সাথে মফিজুল ইসলাম ও শিল্পী আক্তার গংরা প্রতারণা করে অত্র এলাকায় থাকা বসতবাড়ী ছেড়ে অজ্ঞাত স্থানে আত্মগোপন রয়েছে। প্রতারক মফিজুল ইসলাম ও শিল্পী আক্তার গংরা আমার সরলতার সুযোগ নিয়া ধাপে ধাপে আমার সর্বমোট ১৭,০০,০০/-(সতেরো লক্ষ) টাকা বে-আইনীভাবে আত্মসাৎ করার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।
আবু বক্কর সিদ্দিক আরও বলেন, প্রতারক মফিজুল গংরা আমাকে সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে পথে বসিয়ে দিয়েছে। স্থানীয় এলাকাবাসীর সহযোগিতা নিয়ে মফিজুল গংদের অনেক খোঁজাখুঁজি করলেও কোন সন্ধান পাইনি।
নিরুপায় হয়ে আইনের আশ্রয় নিয়েছি। প্রতারকচক্রের কাছ থেকে টাকা উদ্ধারের সহায়তা প্রার্থনা করে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার নিকট আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অভিযোগ দিয়েছি।