বাকৃবিতে দ্রুত বাকসু নির্বাচনের দাবি
‘বাকসু ডায়লগ’-এ ছাত্র সংগঠনগুলোর একক কণ্ঠে আওয়াজ
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ— বাকসু নির্বাচনের দাবিতে ‘বাকসু ডায়লগ’ শীর্ষক মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে চারটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) দ্বিতীয় তলায় অনুষ্ঠিত এই মুক্ত আলোচনা চলে প্রায় চার ঘণ্টাব্যাপী।
আলোচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নিয়ে অবিলম্বে বাকসু নির্বাচন আয়োজনের জোর দাবি জানান। বক্তারা বলেন, শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার আদায় ও নেতৃত্বের শূন্যতা পূরণের একমাত্র উপায় হলো দ্রুত বাকসু নির্বাচন।
বাকৃবি শাখা ইসলামী ছাত্রশিবির, সলিডারিটি সোসাইটি, সাংবাদিক সমিতি, দ্বীনি কমিটি ও গ্রীণ ভয়েসসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা আলোচনায় অংশ নেন। তবে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টসহ কয়েকটি সংগঠন অংশ নেয়নি।
মুক্ত আলোচনায় শিক্ষার্থী-শিক্ষক সম্পর্ক, প্রশাসনের জবাবদিহিতা, ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা, খাবারের মান, যৌন হয়রানির বিচার ও নেতৃত্বের সংকটসহ নানা ইস্যুতে খোলামেলা মতামত প্রকাশ করেন বক্তারা।
বাকৃবি শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের দপ্তর সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, “শিক্ষার্থীদের দাবি তুলে ধরার ও প্রশাসনের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার একমাত্র প্ল্যাটফর্ম হতে পারে বাকসু। ক্ষমতার ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে দ্রুত নির্বাচন দিতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “বাকসু না দেওয়া বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশের পরিপন্থী। প্রশাসনকে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে— কারণ অধিকার কেউ দেয় না, অধিকার আদায় করে নিতে হয়।”
মেয়ে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি জাবিন তাসনীম বলেন, “ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসন ব্যর্থ। যৌন হয়রানির ঘটনার বিচার প্রক্রিয়া ধীর ও অনির্দিষ্ট। বাকসু থাকলে এসব সমস্যার দ্রুত সমাধান সম্ভব হতো।”
দ্বীনি কমিটির প্রতিনিধি মারুফ বিল্লাহ বলেন, “শিক্ষার্থীরা যখন কোনো দাবি নিয়ে শিক্ষকদের কাছে যায়, তখন প্রশ্ন করা হয়— ‘তুমি কে?’ বাকসু থাকলে শিক্ষার্থীরা বৈধ প্রতিনিধি হয়ে কথা বলার সুযোগ পেত।”
শেষভাগে বাকৃবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি আবু নাছির ত্বোহা বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের খাবারের মান নিম্নমানের, অথচ আমরা পুষ্টিবিদ তৈরির প্রতিষ্ঠান। প্রশাসনের ব্যর্থতায় শিক্ষার্থীরা মৌলিক অধিকার থেকেও বঞ্চিত। শিক্ষার্থীদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এখনই কার্যকর ছাত্র সংসদ গঠন সময়ের দাবি।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের বোনদের রাস্তায় নেমে নিরাপত্তা দাবি করতে হচ্ছে— এর চেয়ে দুঃখজনক কিছু হতে পারে না। এটি প্রশাসনের ব্যর্থতার স্পষ্ট প্রমাণ।”
বক্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন, শিক্ষার্থীদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় অচিরেই বাকসু নির্বাচনের দাবিতে নতুন আন্দোলনের ধারা তৈরি হবে।












