
ময়মনসিংহে সাংবাদিকের উপর দায় চাপিয়ে চর নিলক্ষীয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি রফিকুল ইসলাম (রফিক মাস্টার) ও মহানগর আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক মতিউর রহমান ফয়সালের লালিত, পতিত আওয়ামী সরকারের সংসদ সদস্য মোহিত উর রহমান শান্তর রাজনৈতিক অনুসারী আওয়ামী লীগ নেতা সন্ত্রাসী শাহীনকে আটক করে থানা থেকে ছেড়ে দিয়ে ব্যপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) আব্দুল্লাহ আল মামুন। এতে চরাঞ্চল বাসীর মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নিন্দা জানিয়েছে সাংবাদিক সমাজ।
সরেজমিনে দেখা যায়, গত (২৯ জুন) ময়মনসিংহে এম এন এন্টারপ্রাইজে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেতা সিদ্দিকুর রহমান শাহীনকে হ্যান্ডকাপ পড়িয়ে নিয়ে আসে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ। বাদী মহসিন আলম লিখিত অভিযোগ নিয়ে থানায় গিয়ে দেখে অভিযুক্তকে ছেড়ে দিয়েছে।
এসময় কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শিবিরুল ইসলামকে বলতে শোনা যায়, ডিআইজি ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানিয়েছেন একজন সাংবাদিক শাহিনকে ৭বছর ধরে হয়রানি করছে তাই অভিযুক্তকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এতে বাদী ক্ষুব্ধ হয়ে তার নিজের বিচার দাবী করেন।
এ ঘটনার প্রেক্ষিতে পরদিন (৩০ জুন) অভিযুক্ত সিদ্দিকুর রহমান শাহীন ২০/৩০ জনকে সাথে নিয়ে হৈই হুল্লা করে থানায় সাংবাদিকসহ বাদী মহসিন আলমের বিচার দাবী করে।
এসময় অভিযুক্ত সিদ্দিকুর রহমান শাহীনের সাথে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের ইউনিয়ন শাখার সহ-সভাপতি আশিক ও যুবলীগের সহ-সভাপতি জহিরুল ইসলাম নেতৃত্ব দেয়। বিষয়টি ওসি বাদীকে জানালে সেও থানায় আসে সাথে শতাধিক লোকজন নিয়ে।
উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে সালিসি বৈঠক করেন ওসি শিবিরুল ইসলাম। এসময় পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম, এসআই আকবর আলী, এসআই খালিদ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও বাদী বিবাদীর সঙ্গে আসা লোকজন বেশি হওয়ায় অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।
থানায় সালিসি বৈঠকে সিদ্দিকুর রহমান শাহীন দোষী প্রমানিত হওয়ার পরেও গ্রেফতার না করে মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেয় থানা পুলিশ।
এদিকে কোতোয়ালি মডেল থানা থেকে ৩০০গজের ভিতরে আ”লীগ নেতা রফিকুল ইসলাম (রফিক মাস্টার) ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ মহানগরের আইন বিষয়ক সম্পাদক মতিউর রহমান ফয়সালের বাসা, সিনাটান করে থানার সামনে দিয়ে প্রতিনিয়ত দিবালোকে যাতায়াত করলেও অদৃশ্য কারনে রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।
কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শিবিরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি ডিআইজি স্যারকে অবগত করেছি, এটাও বলেছি একজন সাংবাদিকের পায়ে রড পড়িয়ে রেখেছে, আপনি হলে কি করতেন। চর নিলক্ষীয়ায় শাহিন নামের দাউদ ইব্রাহিম থাকবে না বলে মন্তব্য করেন ওসি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) আব্দুল্লাহ আল মামুনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, শাহিন এলাকার ৩০/৪০ জন লোক নিয়ে আমার কাছে এসেছিল, তখন বারবার সাংবাদিকের নাম বলেছিল, যে ঘটনার প্রেক্ষিতে আনা হয়েছে তাতে দোষী প্রমানিত না হওয়ায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিক তাকে হয়রানি করছে বলে ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে, ওসি এমন কথা বলে থাকলে সেটা ওসির বক্তব্য।
থানায় সালিসি বৈঠকে ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতারা উপস্থিত ছিল এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন এতকিছু তদন্ত করিনি, এত সময় নাই। শাহিন নির্দোষ আপনার তদন্ত উঠে এসেছে কিন্তু সন্ত্রাসী শাহিন সাংবাদিকের উপর হামলা করে হাত পা গুড়িয়ে দিয়েছে এমন তথ্য তদন্তে উঠে আসেনি? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন এগুলো জানিনা যে অভিযোগে আনা হয়েছে সেটার সত্যতা পাইনি।