
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার মানকোন ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (২৩ আগষ্ট) ভোররাত সাড়ে ৩টার দিকে একটি পিকআপ ভ্যানে করে ১০-১৫ জনের একটি ডাকাত দল সশস্ত্র অবস্থায় মোহাম্মদ আলীর বাড়িতে ঢুকে ডাকাতি করে।
এসময় ওই বাড়িতে থাকা ভাড়াটিয়া দুই পরিবারের কাছ থেকে স্বর্ণাংকার, নগদ অর্থ ও জিনিসপত্র ডাকাতি করে। ডাকাত দল যাওয়ার সময় একাধিক ককটেল ফাটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। তবে থানা পুলিশ এই ঘটনাকে ডাকাতি বলতে রাজি নয়। পুলিশ বলছে ভিন্ন কিছু। তবে তদন্তের স্বার্থে সেই ভিন্ন কিছুটা কি তা এই মুহুর্তে জানাতে চাচ্ছে না পুলিশ।
ডাকাতির শিকার পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকেন বগুড়ার সাব্বির হোসেন ও কুষ্টিয়ার অনিক আহমেদ। তারা দুজনেই স্থানীয় জায়েদ ফ্লাওয়ার মিলে কাজ করেন। ডাকাতরা অনিক আহমেদের স্ত্রী তাজমিন আক্তার কারিমার গলার চেইন ও কানের দুল ছিনিয়ে নেয় এবং অনিক আহমেদকে মারধর করে। অপরদিকে সাব্বির হোসেনের কাছ থাকা নগদ টাকা ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। ডাকাতদের দ্বারা বাড়ীর নারীরাও হেনস্তার শিকার হন।
ডাকাতির শিকার অনিক আহমেদ বলেন, আমি কিছু বুঝে উঠার আগেই আমাকে মারধর শুরু করে এবং যা কিছু আছে বের করে দিতে বলে। আমার স্ত্রীর গলার চেইন ও কানের দোল নিয়ে যায়।
অপরদিকে ভুক্তভোগী সাব্বির হোসেন বলেন, প্রথমে কেচিগেইটের তালা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে এবং কাঠের দড়জা ভেঙ্গে রুমে প্রবেশ করে। আমরা প্রচন্ড ভয় ও আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। আমাদের মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়। আমাদের ডাক চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে আসে।
প্রত্যক্ষদর্শী নাঈম হোসেন জানান, ভোররাতে ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার শুনে বাইরে এসে একটি হলুদ রঙের পিকআপ ভ্যান দাঁড়িয়ে থাকতে দেখি। এলাকাবাসী বাঁধা দিলে ডাকাতরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় এলাকায় চরম ভয় ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা রেদওয়ান ইসলাম শাওন বলেন, আমরা একটি চলন্ত ট্রাক রাস্তার মাঝে দাঁড় করিয়ে ডাকাত দলের পিকাপভ্যান আটকানোর চেষ্টা করি, পরে তাদের গাড়ী ঘুরিয়ে চেচুয়া বাজারের দিকে নিয়ে যেতে থাকে, সেখানেও এলাকাবাসীর ব্যারিকেড দেয়। তখন তারা দেশীয় অস্ত্র রামদা ঘুড়াতে থাকে এবং একাধিক ককটেল বিস্ফোরণ করতে করতে আবার পিকাপভ্যানটি ঘুুরিয়ে ভাবকীর মোড়ের দিকে নিয়ে যায়।
প্রতিবেশী মো: আল-আমীন বলেন, ককটেলের শব্দে মনে হচ্ছিলো এলাকায় গুলাগুলি চলতেছে। প্রায় ৩০ মিনিট ডাকাত দলের সাথে এলাকাবাসীর ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিকট শব্দের কারণে ট্রাক ড্রাইভার ভয়ে তার গাড়ীটি শরিয়ে নেয় এবং ডাকাতদল পালিয়ে যায়।
ডাকাত দল পালানোর সময় এলাকাবাসী বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তারা একাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে এলাকায় তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাস্থল থেকে কিছু বিস্ফোরকও উদ্ধার করা হয়েছে।
মুক্তাগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিপন চন্দ্র গোপ বলেন, শুধু ডাকাতি না আমরা ভিন্ন কিছু ধারণা করছি। ঘটনার তদন্ত চলছে। তদন্তের কারণে সব বলা যাচ্ছে না। তবে আমাদের আইনি প্রক্রিয়া চলমান আছে।