প্রকাশের সময়: মঙ্গলবার, ১২ আগস্ট, ২০২৫ । ৬:১৫ পিএম প্রিন্ট এর তারিখঃ বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর ২০২৫, ১৮ আশ্বিন ১৪৩২

‘টর্চার সেলে’ নির্যাতন চালানো ছাত্রদল নেতা গ্রেপ্তার, দল থেকে অব্যাহতি

ইউটিভি ডেস্ক রিপোর্ট।।

সোমবার (১১ আগষ্ট) ময়মনসিংহের তারাকান্দায় চাঁদাবাজি ও মারপিটের অভিযোগে করা মামলায় তারাকান্দা উপজেলার বানিহালা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক জিয়েস ও তাঁর দুই সহযোগী রাফি এবং আব্দুল্লাহকে গ্রেপ্তার গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বানিহালা ইউনিয়নের পৃথক এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ছাত্রদল নেতার নাম হিজবুল আলম ওরফে জিয়েস, বানিহালা ইউনিয়নের মাঝিয়ালি গ্রামের মঞ্জুরুল ইসলামের ছেলে ও একই ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক। গ্রেফতারের পর তাঁকে দলীয় পদ থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দিয়েছে ময়মনসিংহ জেলা উত্তর ছাত্রদল। গতকাল রাতে এ–সংক্রান্ত একটি চিঠি প্রকাশিত হয়।

এর আগে গতকাল ভোরে হিজবুলের দুই সহযোগী রাফি (১৯) ও আবদুল্লাহকে (২০) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই দুজনকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। আজ তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হবে।

সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, এক যুবককে জিয়েস এর সহযোগী রাফি ও আবদুল্লাহ মারধর করছেন এবং ভিডিও কলে জিয়েসকে রেখে গলায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ৪০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করছেন। পরে টাকা দেওয়ার আশ্বাস দিলে ওই যুবককে ছেড়ে দেওয়া হয়।

চাঁদাবাজিসহ নানা কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করতে গিয়ে তার হামলার শিকার হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন ময়মনসিংহ মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক মামুন সরকার। এ ঘটনায় পুলিশ জিয়েস ও তার দুই সহযোগিকে গ্রেপ্তার করেছেন।

তিনি জানান, ৮ আগস্ট মাঝিয়ালি বাজারে এক দোকানদারের কাছে ৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন হিজবুল। একপর্যায়ে ওই দোকানিকে মারধর করে তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে দোকানটি খোলার ব্যবস্থা করে দেন মামুন। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে পরদিন (৯ আগস্ট) মামুনকে মারধর করেন হিজবুল। এই ঘটনায় গতকাল তারাকান্দা থানায় মামুন সরকার বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। এতে হিজবুলসহ অজ্ঞাতপরিচয় ৪–৫ জনকে আসামি করা হয়।

ওই মামলায় অভিযান চালিয়ে গতকাল ভোরে রাফি ও আবদুল্লাহ এবং রাত ৯টার দিকে হিজবুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় হিজবুলের একটি আস্তানায় অভিযান চালিয়ে নির্যাতনের বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র ও নন–জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প উদ্ধার করে পুলিশ। মামলা ও গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা তারাকান্দা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) লিটন চন্দ্র পাল।

পুলিশ ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় হিজবুলের কোনো তৎপরতা দেখা না গেলেও গত বছরের আগস্টের পর বানিহালা ইউনিয়নে ব্যাপকভাবে আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করেন। মাঝিয়ালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে নিজের একটি মাছের খামারে ‘টর্চার সেল’ তৈরি করেন। সেখানে দেশি অস্ত্র প্রদর্শন ও আটক ব্যক্তিদের তাঁর মারধরের ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ওই আস্তানায় বিভিন্ন ব্যক্তিকে আটকে রেখে মুঠোফোনে ভিডিও করে কিংবা নন–জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রাখতেন হিজবুল। নির্যাতনের পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে স্বীকারোক্তি নিতেন যে তাঁরা হিজবুলের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে ময়মনসিংহ উত্তর জেলা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন তালুকদার আজ সকালে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছাত্রদলের ওই নেতার (হিজবুল) সম্পর্কে বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ শোনা যাচ্ছিল। ওই অবস্থায় তাঁকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’

চেয়ারম্যান: তানভীর হাসান তপু ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: মো: আতিকুল ইসলাম। বার্তাকক্ষ: newsutvbd@gmail.com. কপিরাইট © ইউটিভি বাংলাদেশ সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত

প্রিন্ট করুন