রাজধানীর বিজয়নগরে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় জাতীয় পার্টির কর্মীদের সাথে সংঘর্ষে আহত হয়েছেন কয়েকজন।
জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে ‘পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসর জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক অপতৎপরতা ও দেশবিরোধী চক্রান্তের’ প্রতিবাদে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-শ্রমিক-জনতা’ ব্যানারে মশাল মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা।
এ সময় জাতীয় পার্টিকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে তাদের রাজনীতি করার অধিকার নেই বলে জানান বক্তারা। তারা বলেন, রাজনৈতিক অপতৎপরতা ও দেশবিরোধী চক্রান্ত এই দেশে হবে না। এরপর তারা জাতীয় পার্টির কার্যালয় ঘেরাও করতে বিজয়নগরে যায়। সেখানে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের সাথে সংঘর্ষ হয় ছাত্র-জনতার। এ সময় কয়েকজন আহত হন।
এরপরই জাতীয় পার্টিকে জাতীয় বেঈমান আখ্যা দিয়ে রাজু ভাস্কর্য থেকে বিজয়নগরের উদ্দেশে মিছিলের ডাক দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দু’টি স্ট্যাটাস দেন হাসনাত। এতে তিনি জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ আনেন। পোস্টে তিনি লেখেন, ‘জাতীয় বেঈমান এই জাতীয় পার্টি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিজয়নগরে আমাদের ভাইদের পিটিয়েছে, অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছে। এবার এই জাতীয় বেঈমানদের উৎখাত নিশ্চিত।’
এর পর রাজু ভাস্কর্য থেকে সাড়ে ৭টায় মিছিল নিয়ে তারা বিজয়নগরের উদ্দেশে রওনা হন। মিছিল নিয়ে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে গেলে সেখানে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে আগুন দেয়া হয়।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো: মুজিবুল হক চুন্নু রাত সাড়ে ৮টার দিকে সাংবাদিকদের বলেন, তারা আগামী শনিবার কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে সমাবেশ করতে পুলিশের কাছে অনুমতি চেয়েছেন। জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন। সন্ধ্যার পরে শাহবাগ থেকে একটি মশাল মিছিল নিয়ে একদল লোক কার্যালয়ে হামলা করে।
মুজিবুল হক বলেন, কর্মীদের প্রতিরোধে হামলাকারীরা মার খেয়ে পালিয়ে যায়। আধা ঘণ্টা পর সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে ফিরে তারা কার্যালয় আগুন দেয়। তিনি আরো বলেন, আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিস এসেছিল। তাদের আগুন নেভাতে দেয়া হয়নি। মুজিবুল হক বলেন, এভাবে যদি একটি রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে হামলা হয়, তাহলে দেশে কিসের গণতন্ত্র, কিসের রাজনীতি।
এ ব্যাপারে গণ অধিকার পরিষদের (নুরুল হক নুরের দল) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের বলেন, শাহবাগে সমাবেশ শেষ করে আমরা বিজয়নগরে আসি। জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা আমাদের ওপর অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়।